ব্লাড গ্রুপ না মিললেও রক্ত দেওয়া যায়—কিন্তু সাবধানে!
সব সময় রক্তদানের জন্য ঠিক একই রকম ব্লাড গ্রুপ খুঁজে পাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। তখন চিকিৎসকের পরামর্শে এমন ব্লাড গ্রুপ থেকে রক্ত দেওয়া হয় যেটা “সামঞ্জস্যপূর্ণ”। কিন্তু এখানে কিছু জটিলতা ও ঝুঁকি থাকে—যা জানা খুব জরুরি।
কাকে কাকে রক্ত দেওয়া যায়?
মানুষের রক্তের গ্রুপ প্রধানত দুই ধরনের ভিত্তিতে নির্ধারণ হয়: ABO গ্রুপিং ও Rh ফ্যাক্টর। যেমন:
- O- গ্রুপ: অনেককে রক্ত দিতে পারে (সার্বজনীন দাতা), তবে গ্রহণ করতে পারে শুধু O- থেকে।
- AB+ গ্রুপ: সব ধরনের রক্ত নিতে পারে (সার্বজনীন গ্রাহক)।
তবে এর মানে এই নয় যে সামঞ্জস্যপূর্ণ রক্ত সবসময় ১০০% নিরাপদ—শরীরের প্রতিক্রিয়া একেকজনের একেক রকম হতে পারে।
ঝুঁকি যেগুলো জানতে হবে
যদি ব্লাড গ্রুপ একদম না মেলে, কিংবা মিললেও পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া যায়—তাহলে নিচের সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে:
- রক্তে প্রতিক্রিয়া: শরীর ভুল রক্তকে “বিদেশি” হিসেবে চিনে ধ্বংস করে ফেলতে পারে—যেটা অনেক সময় বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়।
- জ্বর বা অ্যালার্জি: সামঞ্জস্যপূর্ণ রক্তেও হালকা জ্বর, চুলকানি বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা হতে পারে।
- গোপন সমস্যা: কারো শরীরে আগে থেকে থাকা অজানা অ্যান্টিবডির কারণে রক্তের প্রতিক্রিয়া পরে হলেও হতে পারে।
- বারবার রক্ত নিলে ঝুঁকি: যাদের থ্যালাসেমিয়া বা অন্য কারণে ঘন ঘন রক্ত লাগে, তাদের শরীরে অতিরিক্ত কিছু উপাদান জমে যেতে পারে—যেমন খুব বেশি লৌহ (iron)। এটা সময়ের সঙ্গে জটিলতা তৈরি করে।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নয়
একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা: রক্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও, চিকিৎসকের স্পষ্ট পরামর্শ ও তত্ত্বাবধান ছাড়া কোনো অবস্থাতেই রক্ত দেওয়া ঠিক নয়। শুধু গ্রুপ মিলে যাচ্ছে দেখে রক্তদান করাটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
আমাদের প্ল্যাটফর্মে যা মনে রাখবেন
- আমরা রক্তদাতাদের সম্ভাব্য ম্যাচ দেখাতে পারি, কিন্তু রোগীর অবস্থা বুঝে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে চিকিৎসককেই।
- প্রতিটি রক্তদানের আগে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা ও ক্রস-ম্যাচিং হওয়া উচিত।
- আপনি বা আপনার প্রিয়জন যদি রক্ত গ্রহণ করেন, নিশ্চিত হোন হাসপাতাল ও চিকিৎসকের অনুমোদন আছে কি না।
তথ্যসূত্র:
- American Red Cross: Blood Types
- NCBI: Blood Transfusion Reactions
- World Health Organization (WHO)
- Mayo Clinic: Blood Transfusion
⚠️ ব্লাডলি একটি জনসেবামূলক প্ল্যাটফর্ম, চিকিৎসা পরামর্শদাতা নয়। এখানে প্রদত্ত তথ্য কেবল সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য। কোনো চিকিৎসা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তার বা হাসপাতালের পরামর্শ নিন।